A Complete Paragraph On Greenhouse Effect (in Bengali)

গ্যাসীয় বায়ুদূষক, যেগুলি তাপশােষণ ও সংরক্ষণ ক্ষমতা আছে, পৃথিবীর গড় উষ্ণতা বৃদ্ধিতে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করে তাদের গ্রিনহাউস গ্যাস বলে। যেমন- CO2

গ্রিনহাউস প্রভাব ( Greenhouse Effect )

       ইংরেজি ‘গ্রিনহাউস’ শব্দটি এখানে রূপকার্থে ব্যবহৃত হয়েছে , এর প্রকৃত অর্থ হল উদ্ভিদ পরিচর্যার জন্য নির্মিত কাচের ঘর । উচ্চ অক্ষাংশের শীতপ্রধান দেশগুলিতে , যেখানে বছরের অধিকাংশ সময়ে পরিবেশীয় তাপমাত্রা হিমাঙ্কের কাছাকাছি থাকে , সেখানে প্রচণ্ড শৈত্যের মধ্যেও উদ্ভিদ প্রতিপালনের জন্য বাগানে স্বচ্ছ কাচের দেয়াল ও ছাউনিবিশিষ্ট ঘর তৈরি করা হয় । এই ঘরকেই গ্রিনহাউস বা সবুজ ঘর বলা হয় । এই সবুজ ঘরের কাচের ছাউনি বা দেয়ালের একটি বৈশিষ্ট্য হল এর মধ্য দিয়ে সূর্য থেকে আগত ক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘ্যের রশ্মি সহজেই ভিতরে প্রবেশ করতে পারে , কিন্তু গ্রিনহাউসের ফলে মৃত্তিকা কর্তৃক পরিত্যক্ত তাপীয় বিকিরণ ( অর্থাৎ বৃহৎ তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের রশ্মি ) কাচের মধ্য দিয়ে গ্রিনহাউসের বাইরের বায়ুমণ্ডলে ফিরে যেতে পারে না । বরং কাচের দেয়ালের অভ্যন্তর তলে প্রতিফলিত হয়ে পুনরায় গ্রিনহাউসের উদ্ভিদ ও মৃত্তিকার ওপর আপতিত হয় । এর ফলে গ্রিনহাউসের অভ্যন্তরস্থ উয়তা বাইরের বায়ুমণ্ডলের তুলনায় বেশি থাকে এবং গ্রিনহাউসের মধ্যেকার উদ্ভিদ তাদের বেড়ে ওঠা ও বেঁচে থাকার প্রয়ােজনীয় উষ্ণতা পেয়ে থাকে ।


গ্রিনহাউস গ্যাসসমূহ ( Greenhouse Gases )

       প্রধানত যেসব গ্যাসীয় বায়ুদূষকগুলি পৃথিবীর গ্রিনহাউস প্রভাব , অর্থাৎ গড় উষ্ণতা বৃদ্ধিতে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করে তাদের গ্রিনহাউস গ্যাস বলা হয় । মূলত বায়ুমণ্ডলে যেসব গ্যাসগুলির তাপশােষণ ও সংরক্ষণ ক্ষমতা আছে সেগুলিই হল গ্রিনহাউস গ্যাস । কার্বন ডাইঅক্সাইড হল প্রধান গ্রিনহাউস গ্যাস । এ ছাড়া মিথেন , ওজোন , ক্লোরােফ্লুরােকার্বন , নাইট্রাস অক্সাইড , জলীয় বাষ্প প্রভৃতিকে গ্রিনহাউস গ্যাস বলা হয় ।


বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস প্রভাব ( Greenhouse Effect of the Atmosphere )

      বায়ুমণ্ডলের আস্তরণে ঢেকে থাকা পৃথিবীকে আমরা একটি বৃহৎ গ্রিনহাউসরূপে কল্পনা করতে পারি । মানুষের বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপের ফলে সংঘটিত বায়ুদূষণের জন্য কার্বন ডাইঅক্সাইডসহ আরও কয়েকটি গ্যাসের ঘনত্ব বায়ুমণ্ডলে বৃদ্ধি পাওয়ায় পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ক্রমশ বাড়ছে এবং পৃথিবীর এই উষ্ণতা বৃদ্ধির ঘটনাকে গ্রিনহাউস প্রভাব বলা হয় । গ্রিনহাউসের কাচের আবরণের মতাে বায়ুমণ্ডলের ওই সমস্ত গ্যাসের একটি আস্তরণ তৈরি হয়েছে । এই আস্তরণের মধ্যে দিয়ে সূর্য থেকে আগত দৃশ্যমান ও ক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘ্যের অবলােহিত রশ্মি ( তরঙ্গদৈর্ঘ্য 0.8-4 gm ) সহজেই পৃথিবীতে প্রবেশ করে পৃথিবীপৃষ্ঠ ও বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করে । কিন্তু পৃথিবীর তাপ বৃহৎ তরঙ্গদৈর্ঘ্যযুক্ত অবলােহিত রশ্মি ( তরঙ্গদৈর্ঘ্য 4-50 gm ) বা তাপীয় বিকিরণ হিসেবে মহাশূন্যে ফিরে যেতে পারে না । এই গ্যাসের আবরণ দ্বারা পুনঃপ্রতিফলিত হয়ে পৃথিবীতে ফিরে আসে এবং পৃথিবীর উত্তাপের সমতা বিনষ্ট করে , অর্থাৎ পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ক্রমশ বৃদ্ধি পায় । এই ঘটনাকে গ্রিনহাউস প্রভাব বলা হয় ।

        সুতরাং , বায়ুদূষণজনিত কারণে কার্বন ডাইঅক্সাইডের ঘনত্ব বৃদ্ধির জন্য পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা এইভাবে বেড়ে যাওয়াকেই গ্রিনহাউস প্রভাব বলা হয় ।

          বিখ্যাত জলবায়ু বিজ্ঞানী ব্যারি ( Barry ) এবং চোরলে ( Chorley ) গ্রিনহাউস প্রভাবের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছেন-  “ ক্ষুদ্র সৌর বিকিরণের ক্ষেত্রে বায়ুমণ্ডলের স্বচ্ছধর্মির্তার সাপেক্ষে , পার্থিব বিকিরণের ক্ষেত্রে বায়ুমণ্ডলের অস্বচ্ছধর্মিতাকে গ্রিনহাউস প্রভাব বলা হয় । ”  তবে এখানে উল্লেখ করা প্রয়ােজন যে পৃথিবী নিজেই একটি বৃহৎ গ্রিনহাউস । পৃথিবী নিজেই স্বাভাবিক গ্রিনহাউস প্রভাবে প্রভাবিত হয় বলেই পৃথিবীতে জীবজগতের উৎপত্তি , বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য পরিমিত উয়তা বিরাজ করে । তাই পৃথিবীতে জীবমণ্ডলের উদ্ভব হয়েছে ।


গ্রিনহাউস গ্যাস বৃদ্ধির কারণ ( Causes of Increase of Greenhouse Gases )

      মানুষের বিভিন্ন অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপের জন্য গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির নির্গমন হার ক্রমশই বেড়ে চলেছে । এর ফলে পৃথিবীর গড় উষ্ণতাও ক্রমশ বাড়ছে । অর্থাৎ , গ্রিনহাউস প্রভাব বেড়ে চলেছে । গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির পরিমাণ এভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার কারণগুলি হল -

1)  জীবাশ্ম জ্বালানির দহন :  কয়লা , খনিজতেল , প্রাকৃতিক গ্যাস প্রভৃতি জীবাশ্ম জ্বালানি তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনে , শিল্প কারখানায় , পরিবহণ যানে , গৃহস্থালির কাজে এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে । জীবাশ্ম জ্বালানির এরূপ দহনের ফলে বাতাসে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ ক্রমশ বাড়ছে ।

2)  অরণ্যবিনাশ ও জ্বালানি কাঠেরদহন :  দাবানলের ফলে বনভূমি পুড়ে গেলে প্রচুর কার্বন ডাইঅক্সাইড উৎপন্ন হয় । আবার যথেচ্ছ হারে গাছ কাটার ফলে সালােকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় কার্বন ডাইঅক্সাইডের শােষণ কমে যাওয়ায় এবং জ্বালানি হিসেবে বিপুল পরিমাণে কাঠ পােড়ানােয় কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ ক্রমশ বাড়ছে ।

3) কৃষিজমিতে নাইট্রোজেন সার প্রয়ােগ :  বর্তমানে কৃষিজফসলের উৎপাদন বাড়ানাের জন্য কৃষিজমিতে প্রচুর পরিমাণে নাইট্রোজেন সমৃদ্ধ রাসায়নিক সার প্রয়ােগ করা হচ্ছে , ফলে বাতাসে নাইট্রাস অক্সাইডের ( N₂O ) মতাে গ্রিনহাউস গ্যাসের ঘনত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে ।

4)  জৈব আবর্জনার পচন : জলাভূমির উদ্ভিদ পচে গিয়ে , জৈব আবর্জনার স্তুপে আবর্জনার পচে গিয়ে , জলাভূমিতে ধান চাষের পর ধান গাছের অবশিষ্টাংশ পচে গিয়ে প্রচুর পরিমাণে মিথেন গ্যাস উৎপন্ন হয়ে বায়ুতে মিশছে ।

5) ক্লোরােফ্লুরােকার্বনের ব্যবহার : হিমায়ন যন্ত্র , রেফ্রিজারেটর , হিমঘর , এয়ারকন্ডিশনার , ইলেকট্রনিক্স শিল্প , রং শিল্প প্রভৃতি শিল্পে ক্লোরােফ্লুরােকার্বন ব্যবহৃত হয় । এর ফলে বাতাসে ক্লোরােফ্লুরােকার্বনের মতাে গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে ।


গ্রিনহাউস প্রভাবের ফলাফল ( Results of Greenhouse Effect )

বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির ঘনত্ব বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং জীবজগতের ওপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে । যেমন—

1)  পৃথিবীর গড় উষ্ণতা বৃদ্ধি :  বাতাসে গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির পরিমাণ অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় পৃথিবীর উত্তাপের সমতা বিনষ্ট হচ্ছে । অর্থাৎ গ্রিনহাউস প্রভাবের ফলে পৃথিবীর উষ্ণতা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে । শিল্পবিপ্লবের পর আজ পর্যন্ত পৃথিবীর গড় উষ্ণতা প্রায় 1.5 ° C বৃদ্ধি ( 1850-1900 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে 0.5 ° C এবং 1900-2000 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে 1 ° C ) পেয়েছে । পৃথিবীর গড় উষ্ণতার এই ক্রমবর্ধমান অবস্থাকে পরিবেশ বিজ্ঞানীরা গ্লোবাল ওয়ার্মিং ( Global Warming ) বা পৃথিবীর উষ্ণায়ন বা বিশ্ব উষ্ণায়ন নামে অভিহিত করেছেন ।

2) মেরু অঞল ও পার্বত্য অঞ্চলে বরফগলন :   গ্রিনহাউস প্রভাবের জন্য পৃথিবী জুড়ে উষ্ণতা ক্রমশ বাড়তে থাকায় মেরু অঞলের বরফ স্তর এবং পার্বত্য অঞ্চলের হিমবাহ গলতে শুরু করেছে ।

3) সমুদ্র জলতলের উচ্চতা বৃদ্ধি :  গ্রিনহাউস প্রভাবের জন্য পৃথিবীর গড় উষ্ণতা বৃদ্ধি পেলে মেরু অঞ্চল ও পার্বত্য অঞলের বরফ বেশি মাত্রায় গলে গিয়ে সমুদ্র জলতলের উচ্চতা বৃদ্ধি করবে । এখনও পর্যন্ত পৃথিবীর গড় উষ্ণতা প্রায় 1.5 ° C বৃদ্ধি পাওয়ায় সমুদ্র জলতলের উচ্চতা প্রায় 10-12 cm বৃদ্ধি পেয়েছে । পরিবেশ বিজ্ঞানীগণের আশঙ্কা এইভাবে পৃথিবীর উম্নয়নের জন্য এই শতাব্দীর শেষে সমুদ্র জলতলের উচ্চতা 50-90 cm বৃদ্ধি পাবে । এর ফলে সমুদ্র উপকূলবর্তী নিম্নভূমি জলপ্লাবিত হয়ে পড়বে , নদী জলে লবণতা বৃদ্ধি পাবে , ম্যানগ্রোভ বনভূমি ও বন্যপ্রাণীর বিনাশ ঘটবে ।

4) জলচক্রের পরিবর্তন :  গ্রিনহাউস প্রভাবে উষ্ণতা বৃদ্ধি পেলে জলভাগ → বায়ুমণ্ডল → স্থলভাগের মধ্যে জলচক্রের যে আবর্তন ঘটে তাতে বিঘ্ন ঘটবে । এর ফলে-

a) পৃথিবী জুড়ে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অনিয়মিত হয়ে পড়বে । আঞ্চলিকভাবে বাষ্পীভবন বেশি হলে সেখানে প্রবল বর্ষণ হবে , অন্যত্র বৃষ্টিপাতের পরিমাণ হ্রাস পাবে ।

b) বাষ্পীভবনের হার বৃদ্ধি পাবে এবং তার জন্য উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টিপাত এবং পার্বত্য অঞ্চল ও উচ্চ অক্ষাংশে তুষারপাতের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে ।

c) গ্রীষ্মকালীন উষ্ণতা বৃদ্ধি পাবে ।


5) জলবায়ুগত পরিবর্তন :  গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির প্রভাবে বায়ুমণ্ডলীয় উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জলবায়ুগত পরিবর্তন ঘটবে । যেমন—

a) ক্রান্তীয়মণ্ডলের দেশগুলিতেগ্রীষ্মকালের দৈর্ঘ্য বাড়বে ।

b) উচ্চ অক্ষাংশের মেরু সন্নিহিত দেশগুলিতে শীতকালীন উষ্ণতা বৃদ্ধি পাবে এবং শীতকালের স্থায়িত্ব হ্রাস পাবে । ফলে দেশগুলিতে বসন্তকালীন আবহাওয়া পরিলক্ষিত হবে ।

c) পৃথিবীজুড়ে ঘূর্ণিঝড় , বজ্রঝঞ্চা প্রভৃতির মতাে বায়ুমণ্ডলীয় গােলযােগ এবং খরা , বন্যা প্রভৃতির মতাে প্রাকৃতিক দুর্যোগের তীব্রতা বৃদ্ধি পাবে ।



6) কৃষিকাজের পরিবর্তন : গ্রিনহাউস প্রভাবের জন্য পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি পেলে কৃষিকাজের ওপর তার প্রভাব পড়বে । যেমন—

a) গম , বার্লি , ওট , সয়াবিন , তামাক , তুলাে , পাট প্রভৃতি কৃষিজ ফসলের উৎপাদন হার কমবে ।

b) কৃষিজমিতে আগাছা জন্মানাের হার বৃদ্ধি পাবে এবং কৃষিজ ফসলে রােগপােকার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাবে ।

c) সমুদ্র জলতলের উচ্চতা বৃদ্ধি পেলে কৃষিজমির পরিমাণ 10-50 শতাংশ কমে যাবে ।



7) রােগের প্রাদুর্ভাব : গ্রিনহাউস প্রভাবজনিত কারণে উষ্ণতা বৃদ্ধি পেলে হৃদরােগ , ডেঙ্গু , ম্যালেরিয়া , পীতজ্বর , ভাইরাল এনকেফেলাইটিস , ফাইলেরিয়া প্রভৃতি রােগের প্রকোপ বাড়বে ।

8)  উদ্ভিদজগতের ওপর প্রভাব :  উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে উদ্ভিদদের বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ার পরিবর্তন হবে এবং বর্ধিত উষ্ণতার সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পেরে বহু উদ্ভিদ প্রজাতি বিলুপ্ত হবে ।



গ্রিনহাউস প্রভাব নিয়ন্ত্রণের উপায় ( Controlling Measures of Greenhouse Effect )

গ্রিনহাউস প্রভাব বা বিশ্ব উষ্ণায়ন কে দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয় । গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির উৎপাদন বা বাতাসে নির্গমন বন্ধ করতে পারলে গ্রিনহাউসের প্রভাব নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব । পরিবেশ বিজ্ঞানীরা এই গ্রিনহাউস প্রভাব ও বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যে উপায়গুলি চিহ্নিত করেছেন সেগুলি হল —

1) জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ :  কয়লা , খনিজতেল প্রভৃতি জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার ধীরে ধীরে কম করতে পারলে বাতাসে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ কমতে থাকবে ।

2) বনসৃজন :  নতুন নতুন বৃক্ষরােপণের মাধ্যমে বনভূমির আয়তন বাড়াতে পারলে উদ্ভিদ সালােকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় কার্বন ডাইঅক্সাইড শােষণ করে বাতাসে কার্বন ডাইঅক্সাইডের ঘনত্ব হ্রাস করবে ।

3) অপ্রচলিত শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি :  সৌরশক্তি , বায়ুশক্তি , জোয়ারভাটার শক্তি , ভূতাপীয় শক্তি প্রভৃতি অপ্রচলিত শক্তির উৎপাদন ও ব্যবহারে গ্রিনহাউস গ্যাস উৎপন্ন হয় না বলে এগুলির ব্যবহার বাড়াতে হবে ।

4) ক্লোরােফ্লুরােকার্বনের উৎপাদন হ্রাস :  ধীরে ধীরে ক্লোরােফ্লুরােকার্বন যৌগের ব্যবহার কমিয়ে এনে একটি নির্দিষ্ট সময়ে এদের উৎপাদন একেবারে বন্ধ করে দিতে হবে । প্রয়ােজনে ক্লোরােফ্লুরােকার্বন যৌগগুলির ব্যবহার ও উৎপাদনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে হবে ।

5) পরিবহণনের ইঞ্জিন ক্ষমতা বৃদিধ :  বিভিন্ন পরিবহণযানগুলিতে উচ্চ প্রযুক্তি ও ক্ষমতাসম্পন্ন ইঞ্জিন ব্যবহার করে পেট্রোল , ডিজেল প্রভৃতি জ্বালানির অপচয় ও ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে ।

6) মিথেন ও নাইট্রাস অক্সাইডের নির্গমন হ্রাস :  জলাভূমি সংস্কার করে এবং জলাভূমিতে ধানচাষ বন্ধ করে মিথেন গ্যাসের নির্গমন বন্ধ করা যায় । আর কৃষিজমিতে নাইট্রোজেন ঘটিত সারের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে N₂O এর নির্গমন বন্ধ করা সম্ভব ।

7) নিরন্তর গবেষণা :  গ্রিনহাউস প্রভাব নিয়ন্ত্রণ করে বিশ্ব উষ্ণায়ন কে বন্ধ করার জন্য ক্রমাগত গবেষণা করে নতুন নতুন উপায় খুঁজে বের করতে হবে ।

8) জনসচেতনতা :   গ্রিনহাউস প্রভাবের ক্ষতিকর ফলাফল সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করার জন্য ক্রমাগত প্রচার চালিয়ে যেতে হবে ।