National Awards And Honours Of India

National Awards And Honours Of India

 ভারতরত্ন

  বিজ্ঞান, সাহিত্য, কলা, সমাজসেবা ইত্যাদি ক্ষেত্রত বিশিষ্ট সেবাদানকারী ব্যক্তিকে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়ে থাকে, ভারতরত্ন হল ভারতে প্রদান করা সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান। 1954 সালে প্রথমবার ভারত রত্ন প্রদান করা শুরু হয়েছিল। সেই বছর সম্মানীয় চক্রবতী রাজা গোপালাচারী, চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রমন ও সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণকে এই সম্মাননা দেওয়া হয়েছিল।

তবে কেবল ভারতের ব্যক্তিকে নয়, এই সম্মান বিদেশী ব্যক্তি যেমন: দক্ষিণ আফ্রিকার নেলসন ম্যান্ডেলা, পাকিস্তানের খান আব্দুল গফর খান প্রমূখ এই সম্মানে বিভূষিত হয়েছেন। 


পরমবীর চক্র

 যুদ্ধক্ষেত্রে শক্রুর সম্মুখীন হয়ে অতুলনীয় সাহস এবং আত্মত্যাগ প্রদর্শনের স্বীকৃতস্বরূপ এই পদক প্রদান হয়। এটি হলো ভারতের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মাননা পুরস্কার। ভারতীয় সেনাবাহিনীর কুমায়ুন রেজিমেন্টের বীর সৈনিক মেজর সোমনাথ শর্মা ছিলেন পরমবীর চক্রের প্রথম প্রাপক। এখনো পর্যন্ত এই বীরত্বের পুরস্কার 21 জনকে প্রদান করা হয়েছে। পদকপ্রাপকের মধ্যে 14 জনকে মরণোত্তর পদক প্রদান করা হয়েছে। পরমবীর চক্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের Medal of Honor এবং যুক্তরাজ্যের The Victoria Cross এর সমতুল্য।


অশোক চক্র

  অতি বিক্রম, সাহসিকতায় নিজের জীবন বলিদান দিয়ে হলেও শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করা ব্যক্তিকে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়। অশোক চক্র হল বীরত্বের জন্য দেওয়া সর্ব্বোচ্চ শান্তিকালীন সামরিক পদক। এই বীরত্বের পুরস্কার শান্তির সময়ে পরমবীর চক্রের সমতুল্য। ভারতের অন্যান্য সম্মাননা ছাড়াও সৈন্য বাহিনীতে সর্বোত্তম জীবন রক্ষা পদক, উত্তম জীবন রক্ষা পদক, জীবন রক্ষা পদক, বিশিষ্ট সেবা ও নাগরিকদের জীবন রক্ষা করার জন্য পরম বিশিষ্ট সেবা পদক, অতি বিশিষ্ট সেবা পদক, বিশিষ্ট সেবা পদক, ইত্যাদি পুরস্কার দেওয়া হয়। অশোক চক্রের প্রথম প্রাপক ছিলেন ভারতীয় বিমানবাহিনীর ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট সুহাস বিশ্বাস এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর নায়েক নরবাহাদুর থাপা, হাবিলদার বচিত্তর সিং। 


পদ্ম সম্মাননা

তিনধরনের পদ্ম সম্মাননা প্রদান করা হয়। সেগুলি হল - পদ্ম বিভূষণ, পদ্মভূষণ ও পদ্মশ্রী ।
সাহিত্য, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান, মানবসেবা, ক্রীড়া ইত্যাদি দিকে খ্যাতি অর্জনকরী ও বিশিষ্ট সেবা প্রদানকারী ব্যক্তিকে ভারত সরকার দ্বারা পদ্ম সম্মাননা প্রদান করা হয় ।


পদ্ম বিভূষণ

   পদ্ম সম্মাননা সমূহের মধ্যে এই সম্মাননা হল শীর্ষ স্থানীয়। এই সম্মাননা প্রাপকদের যে স্মারকটি দেয়া হয়, সেইটি ঘোরানো একটা ট্রফি। এর মধ্যভাগে সোনার বড় পাত বসানো, 4 টি পাপড়ি সাথে 1 টি পদ্ম ফুলের প্রতীক খোদিত করা হয় এবং অন্য দিকে জাতীয় প্রতীকটি অঙ্কিত করা থাকে।


পদ্মভূষণ

পদ্ম সম্মাননা সমূহের মধ্যে এই সম্মাননাটি দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। স্মারকটি পদ্ম বিভূষণের মতোই, কেবল এর পদ্ম ফুলটির প্রতীকটিত 3 টি পাপড়ি আছে। 


পদ্মশ্রী

  এক বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ভারত-এর রাষ্ট্রপতি এই সম্মাননা সমূহ প্রদান করেন । পদ্ম সম্মাননাসমূহের মধ্যে এই সম্মাননা তৃতীয় স্থানে আছে। 1954 সাল থেকে পদ্ম সম্মাননা প্রদান করে আসা হচ্ছে। এর স্মারকটিতে পদ্ম ফুলএর যে প্রতীকটি রয়েছে, তার পাপড়ি সংখ্যা হল 5


ভারতীয় জ্ঞানপীঠ পুরস্কার 

ভারতীয় জ্ঞানপীঠ পুরস্কার ভারতের সর্ব্বোচ্চ সাহিত্য-সম্মাননা। 1965 সাল থেকে এই পুরস্কার প্রদান চালু হয়েছে। ইংরাজীকে ধরে ভারতের সংবিধানের অষ্টম অনুসূচীতে থাকা আধুনিক ভাষাসমূহের যেকোনো ভাষার সাহিত্য-ক্ষেত্রে বিশিষ্ট সৃষ্টিশীল কর্মের জন্য প্রতি বছর ভারতীয় জ্ঞানপীঠ পুরস্কার প্রদান করা হয়। শুরুতে, কোনো একটি নিদিষ্ট গ্রন্থর জন্যি লেখককে জ্ঞানপীঠ পুরস্কার প্রদান করা হত যদিও 1982 সাল থেকে লেখকের সামগ্রিক সাহিত্যকীর্তির মূল্যায়ন করে এই পুরস্কার প্রদানের নিয়ম প্রচলিত হয়। এই পুরস্কারে আছে নগদ 5 লাখ টাকা, একটি মানপত্র ও সরস্বতীর একটি ব্রোঞ্জের মূর্তি। 


সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার 

1995 সাল থেকে এই পুরস্কার প্রদান করে আসা হচ্ছে। ভারতের আঞ্চলিক ভাষাসমূহের উত্কর্ষ ও বিকাশের জন্য সাহিত্য আকাদেমি প্রতিবছর এই পুরস্কার প্রদান করে আসছে। মূল ভাষার উপরে অনূদিত গ্রন্থের জন্যও সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার প্রদান করা হয়। আকাদেমি তারলোকের দ্বারা স্বীকৃত 22 টা ভাষার একাডেমী পুরস্কার দেয়। 


মহাত্মা গান্ধী শান্তি পুরস্কার 

মহাত্মা গান্ধীর অহিংস নীতিতে বিশ্বাস রেখে বিশ্বশান্তি তথা সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার সাধনের উদ্দেশ্যে প্রয়াস করা ব্যক্তি বা সংগঠনকে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। এই পুরস্কারের অর্থমূল্য এক কোটি টকা। মহাত্মা গান্ধীর 125 বছরের জন্ম দিবস উপলক্ষে 1995 সাল থেকে প্রতিবছর এই পুরস্কার প্রদান করে আসা হচ্ছে। 


দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার 

ভারতীয় চলচ্চিত্রের জনকরূপে অভিহিত দাদাসাহেব ফালকের স্মৃতি রক্ষার্থে প্রতিবছর এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। ১৯৬৯ সাল থেকে এই পুরস্কার প্রদান করে আসা হচ্ছে। ভারতীয় চলচ্চিত্রর উত্কর্ষ ও বিকাশের জন্য উল্লেখনীয় কার্যাবলীর স্বীকৃতিস্বরূপ এই পুরস্কার দেওয়া হয়। ভারতীয় চলচ্চিত্রের সর্ব্বোচ্চ পুরস্কাররূপে স্বীকৃত এই পুরস্কারের অর্থমূল্য দুই লাখ টাকা। এর সাথে বিজয়ীকে একটি প্রশস্তি পত্র ও একটি আলোয়ান প্রদান করা হয়। 


রাজীব গান্ধী জাতীয় সদভাবনা পুরস্কার 

1992 সাল থেকে এই পুরস্কার প্রদান করে আসা হচ্ছে। শান্তি, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সন্ত্রাসবাদ বিরোধিতার জন্য কাজ করা ব্যক্তি বা সংন্থাকে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। ভারতের জাতীয় কংগ্রেসর দ্বারা প্রদত্ত এই পুরস্কারে আছে একটি প্রশস্তি পত্র ও 2.5 লাখ টাকা। 

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার 

সর্বভারতীয় ও আঞ্চলিক ভাষার শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের বিভিন্ন দিকে প্রতি বছর বিভিন্ন পুরস্কার প্রদান করা হয়। এই পুরস্কারটি সর্বভারতীয় ভিত্তিতে নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জন্য স্বর্ণকমল ও অন্য আঞ্চলিক ভাষার চলচ্চিত্রের জন্য রজতকমল পুরস্কার প্রদান করা হয়।


কমল কুমারী জাতীয় পুরস্কার 

1990 সালে স্থাপিত কমল কুমারী ফাউণ্ডেসন বিজ্ঞান-প্রযুক্তির ও সংস্কৃতির (সাহিত্য, শিক্ষা, চারুকলা ও পরিবেশনা কলা) দিকে বিশিষ্ট অবদান রাখা ব্যক্তিকে এই পুরস্কার প্রদান করে। এই পুরস্কারে আছে এক লাখ টাকা, একটা ট্রফি ও একটি প্রশস্তি পত্র।


এছাড়াও অনান্য উল্লেখযোগ্য সম্মাননা সমূহ হল-

মহাবীর চক্র, বীর চক্র, সরস্বতী সম্মাননা, রাজীব গান্ধী জাতীয়, সদভাবনা পুরস্কার, সংগীত-নাটক একাডেমী পুরস্কার, ললিত কলা একাডেমী পুরস্কার, শান্তিস্বরূপ ভাটনাগর পুরস্কার, ইন্দিরা গান্ধী শান্তি পুরস্কার, ইন্দিরা গান্ধী জাতীয় সংহতি পুরস্কার, অর্জুন পুরস্কার, দ্রোণাচার্য পুরস্কার, যনুমালাল বাজাজ পুরস্কার, হাফিজ আলি খান পুরস্কার, বিরসা মুণ্ডা পুরস্কার, দয়াবতী মোদী পুরস্কার, গোয়েংকা পুরস্কার, গুজরমল মোদী পুরস্কার, শিক্ষকদের জাতীয় পুরস্কার, কবির সম্মাননা, লতা মংগেশকার পুরস্কার, শিবপ্রসাদ বরুবা জাতীয় পুরস্কার, ব্যাস সম্মাননা, গোবিন্দ বল্লভ পন্ত পুরস্কার, নেহেরু রচনা প্রতিযোগিতা পুরস্কার, মূর্তি দেবী পুরস্কার, জবাহরলাল নেহেরু পুরস্কার, জি ডি বিরলা পুরস্কার ইত্যাদি ।